ঠাকুরগাঁওয়ে দশ বছরেরও প্রকৃত আসামীকে খুজে না পেয়ে একই নামের নিরপরাধ এক ব্যবসায়ীকে জেল খাটালেন পুলিশ। অতঃপর ২৪ ঘন্টার মধ্যে জামিনে মুক্তি পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সংশ্লিস্ট পুলিশ অফিসারের শাস্তি দাবি করেছেন।
অন্যদিকে সমাজে তাকে চোর বানানো থানা হেফাজতে নির্যাতন এবং সন্মানহানি করায় ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছেন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর গ্রেফতারকৃত ব্যবসায়ী জেল থেকে মুক্ত হয়ে রাতেই সাংবাদিকদের কাছে এমন দাবি তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেল হাজত থেকে মুক্ত হওয়া ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি একজন নিরপরাধ ব্যক্তি। বিনা অপরাধে বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি হাবিবুল হক প্রধাণ আমাকে জেলে পাঠিয়েছে। ওসি আমার কাছে মোটা অংঙ্কের অর্থ চেয়েছিল আমি দিতে অস্বিকার করায় রাতভর থানা হাজতে আমাকে নির্যাতন করে জেলে পাঠিয়েছে। এসব পুলিশ অফিসারের বিচার না হলে অনেক নিরপরাধ মানুষ জেল খাটার শংকা রয়েছে।
নিরপরাধ স্বামীকে বিনা অপরাধে জেলে পাঠানোয় আব্দুর রাজ্জাকে স্ত্রী রুপসানা আক্তার কান্না জরিত কন্ঠে বলেন, আমার স্বামীকে গ্রেফতার করার পর আমি ওসি কাছে যাই তিনি আমাকে চোরের বউ বলে খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং থানা থেকে তারিয়ে দেন। আমি ওসির দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করছি। সেই সাথে সমাজে হেয়প্রতিপন্ন হওয়ায় ক্ষতিপুরনের দাবি করছি।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার দুপুরে জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বাজারের মেইন রোডে নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে থাকার সময় পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে কয়েকজন লোক তাঁকে ওই ব্যবসায়ীকে টেনে হেচরে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে পরিবারের স্বজনেরা বালিয়াডাঙ্গী থানায় গিয়ে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় তার নামে চুরির মামলা রয়েছে। মামলার কাগজপত্র দেখতে চাইলে সংশ্লিস্ট থানার ওসি খারাপ আচারণ করে আদালতে খোঁজ নিতে বলেন।
পরে পরিবারের লোকজন মামলার কাগজপত্র তুলে নিশ্চিত হয় ২০১১ সালে ১৬ জুন জেলার রাণীশংকৈল থানায় সাইকেল চুরির একটি মামলায় ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
কিন্তু মামলার কাগজপত্র যাচাই দেখা যায় প্রকৃত মামলার আসামী বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের জিয়াখোর গ্রামের তসলীম উদ্দীন ওরফে বুধু মোহাম্মদের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক। সে রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ বাজারে সাইকেল চুরি করতে গিয়ে ধরা পরে। সে সময় বাজারের লোকজন সাইকেলসহ তাকে রাণীশংকৈল থানা পুলিশের হাতে তুলে দিলে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। পরে আদালতে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। পরবর্তিতে জামিনে মুক্ত হয়ে পালিয়ে যায় ওই আসামী।
হাজিরা না দেয়ায় দশ বছর পূর্বেই ওই মামলায় তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলেও পুলিশ তাকে আটক করতে না পেরে একই নামের ব্যক্তি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মহিষমারী গ্রামের আলিম উদ্দীন ওরফে বৈশাখুর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক নামে রিপরাধ এক ব্যবসায়ী গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।
এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি হাবিবুল হক প্রধান সব অভিযোগ অস্বিকার করে তিনি দায় চাপান আদালতের উপর। যা করেছে আদালত করেছে। এর বাইরে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।